পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে ১৯৮৯ সালে পরিবেশ অধিদপ্তর সৃষ্টি করা হয়। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ এর মাধ্যমে পরিবেশ অধিদপ্তরকে পরিবেশ সুরক্ষা, পরিবেশ উন্নয়ন ও পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর সদর কার্যালয় এবং ৬ (ছয়) টি বিভাগীয় কার্যালয়, মহানগর কার্যালয় ও ২ ১টি জেলা কার্যালয়ের মাধ্যমে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে থাকে।
পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে নিম্নরূপ সেবা প্রদান করা হয় :
· শিল্প প্রতিষ্ঠানের দূষণ জরীপ, দূষণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান চিহ্নিতকরণসহ দূষণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে উদ্বুদ্ধ/বাধ্য করা এবং প্রয়োজন অনুসারে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন এবং বিধি লঙ্ঘনকারী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা ও পরিবেশ আদালতে মামলা দায়েরের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ;
· নতুন স্থাপিতব্য বা বিদ্যমান শিল্প কারখানার/প্রকল্পের আবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পরিদর্শন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান;
· সরকারী ও বেসরকারী সংস্থা ও ব্যক্তি পর্যায়ে গৃহিত উন্নয়ন কার্যক্রমের পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ (ইআইএ) প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদন এবং ইআইএ সম্পাদন করার বিষয়ে পরামর্শ প্রদান;
· পরিবেশ দূষণ সংক্রান্তঅভিযোগ গ্রহণ এবং তা তদন্তেরমাধ্যমে নিষ্পত্তি করা, নির্বিচারে পাহাড় কর্তন রোধ, যানবাহন জরিপ এবং দূষণকারী
যানবাহনের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা;
· বায়ু ও পানির গুণগত মান পরিবীক্ষণ, গবেষণাগারে বায়ু, পানি ও তরল বর্জ্যের নমুনা বিশ্লেষণ;
· দেশের বিভিন্ন এলাকার নদী, পুকুর, টিউবওয়েল ও খাবার পানির গুনগতমান নির্ণয়ের জন্য নিয়মিত নমুনা সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, ডাটা সংরক্ষণ ও প্রতিবেদন প্রেরণ;
· পরিবেশ সংক্রান্তবিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কনভেনশন, চুক্তি ও প্রোটোকলের দেশীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাধ্যবাধকতা প্রতিপালনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ;
· জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবেলায় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন ।
· দেশের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং জীবনিরাপত্তার ক্ষেত্রে কার্যক্রম গ্রহণ;
· বিষাক্ত এবং বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থের আমদানি, পরিবহন, ব্যবহার, ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে কার্যক্রম গ্রহণ;
· ওজোনস্তরক্ষয়কারী দ্রব্যসামগ্রী নিয়ন্ত্রণ;
· পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় জনগণের অংশগ্রহণে টেকসই জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ;
· পরিবেশ বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং পরিবেশ বিষয়ক তথ্য সকলের কাছে সহজলভ্য করার লক্ষ্যে প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা এবং পরিবেশ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক দিবসসমূহ যথাযথ মর্যাদায় উদ্যাপন;
· সময় সময়ে পরিবেশগত অবস্থানচিত্র প্রণয়ন (স্টেট অব এনভায়রনমেন্ট রিপোর্ট) ও বিতরণ;
· পরিবেশ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় জনগণের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সামাজিক/সাংস্কৃতিক/অর্থনৈতিক গোষ্ঠীর সাথে অংশীদারিত্বমূলক কার্যত্রম প্রতিষ্ঠা;
· পরিবেশগত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিভিন্ন প্রকল্প এবং গবেষণাকর্ম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন;
· নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন ও বাজারজাতকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ;
· সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্প/উদ্যোগ পর্যালোচনা ও মূল্যায়নপূর্বক পরিবেশগত মতামত প্রদান;
· পরিবেশ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে সক্ষমতা তৈরীর লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, মতবিনিময় সভা, ইত্যাদি আয়োজন ;
· দেশের প্রায় সকল মন্ত্রণালয় এবং তার অধীনস্থ দপ্তরসমূহসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন কমিটির সদস্য হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা পালন।
সেবা প্রদানের পরিধি ও পদ্ধতিঃ
ক্রমিক নং |
সেবা প্রদানের পরিধি |
করণীয় |
সেবা প্রদানের প্রাথমিক কার্যত্রম |
গ্রাহক বা ভোক্তার বিবরণ |
১. |
শিল্পদূষণ নিয়ন্ত্রণ |
দূষণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান চিহ্নিতকরণ এবং পরিবেশ সংরক্ষণ আইন এবং বিধির আলোকে ব্যবস্থা গ্রহণ |
মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শন/জরীপ পরিচালনা, উদ্বুদ্ধকরণ, নোটিশ প্রদান, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা অথবা পরিবেশ আদালতে মামলা দায়ের। |
জনগণ |
২. |
পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান |
স্থাপিতব্য বা বিদ্যমান শিল্পপ্রতিষ্ঠান/প্রকল্পের আবেদনপত্র ও কারিগরী প্রতিবেদনসমূহ (আইইই, ইআইএ, ইএমপি ইত্যাদি) পর্যালোচনাসহ সরেজমিন পরিদর্শন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক সিদ্ধান্তগ্রহণ |
আবেদনপত্রসহ কারিগরী প্রতিবেদনসমূহ (আইইই, ইআইএ, ইএমপি ইত্যাদি) গ্রহণ, পর্যালোচনা, প্রকল্প এলাকাসহ পারিপার্শ্বিক পরিবেশ পরিদর্শন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্নকরণ |
উদ্যোক্তা |
৩. |
পরিবেশগত সমীক্ষা পরিচালনা এবং পর্যালোচনা |
শিল্পপ্রতিষ্ঠান/প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ (ইআইএ) প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদন এবং ইআইএ সম্পন্নকরার বিষয়ে পরামর্শ প্রদান; পরিবেশগত দূর্ঘটনার ক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ। |
সংশিস্নষ্ট ইআইএ প্রতিবেদন গ্রহণ, পর্যালোচনা, প্রকল্প এলাকাসহ পারিপার্শ্বিক পরিবেশ পরিদর্শন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্নকরণ; পরিবেশগত দূর্ঘটনার ক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে সমীক্ষা পরিচালনা। |
উদ্যোক্তা এবং জনগণ |
৪. |
পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তি |
পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ এবং তা তদন্তের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা |
অভিযোগ/প্রতিকার প্রার্থনার আবেদনপত্র গ্রহণ, সরেজমিন পরিদর্শন, তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ। |
জনগণ |
৫. |
পাহাড়ের প্রতিবেশ ব্যবস্থা সংরক্ষণ |
নির্বিচারে পাহাড় এবং গাছপালা কর্তন রোধ |
সরেজমিন পরিদর্শন, তদন্তকার্যক্রম পরিচালনা ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ |
জনগণ |
৬. |
যানবাহনজনিত দূষণ নিয়ন্ত্রণ |
যানবাহন জরিপ এবং দূষণকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা |
রাস্তায়চলাচলরত যানবাহন পরীক্ষা ও দূষণকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ। |
জনগণ |
১৩. |
পরিবেশগত সচেতনতা বৃদ্ধি |
পরিবেশ বিষয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং পরিবেশ বিষয়ক তথ্য সকলের কাছে সহজলভ্য করার লক্ষ্যে প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা এবং পরিবেশ সংক্রান্তগুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক দিবসসমূহ যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন |
সচেতনতার উপকরণ হিসেবে পরিবেশ সংক্রান্তপোস্টার, লিফলেট, বুকলেট, স্মরণিকা টিভি স্পট, ডকুমেন্টারী, গণবিজ্ঞপ্তি, ইত্যাদি তৈরী ও প্রচার। এছাড়া জাতীয় পর্যায়ে চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতা, র্যালী, সেমিনার/মুক্ত আলোচনার আয়োজন এবং শিক্ষা পাঠ্যক্রমে পরিবেশ ব্যবস্থাপনা বিষয়টি অন্তর্ভূক্তকরণ, ইত্যাদি কার্যক্রমগ্রহণ। |
জনগণ |